ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

টইটং ইউপি নির্বাচনে গুজব ছড়ালেই ব্যবস্থা

পেকুয়া প্রতিনিধি :: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ালেই আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। পেকুয়ায় মতবিনিময়কালে তিনি বলেছেন, ভোট হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করাতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। যে দলেরই হউক না কেন নির্বাচন নিয়ে কাউকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ দেওয়া হবেনা। গুজব না ছড়ানোর জন্য প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা আরোপ করা হয়েছে। কেউ যদি এর ব্যতয় ঘটানোর চেষ্টা করে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই দিন শান্তিপূর্ন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য কক্সবাজারের প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ নির্দেশনা এসেছে।

নির্বাচনের পূর্বে এ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ ধরনের বার্তাই দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ ঘোষনা আসলেও ভোট নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বেড়েছে। দুই রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আ’লীগ। বিএনপি দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন থেকে বিরত রয়েছে। তবে ওই ইউনিয়নে দলটির একজন হেভিওয়েট প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন। জেড এম মোসলেম উদ্দিন স্বতন্ত্র পদে চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন। তিনি মূলত আ’লীগ শিবিরের বিপরীত প্রার্থী। অপরদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। এর আগেও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

দুর্ণীতির অভিযোগে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হয়। দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চিত ছিল জাহেদ। পরবর্তীতে এসবের অবসান ঘটিয়ে আ’লীগ তাকে ফের নৌকার প্রার্থী করে। মেম্বার প্রার্থী ছরওয়ার আলম বলেন, আমরা সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয়ের মধ্যে আছি। আমি প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। যে কোন মুহুর্তে আমাকে গুম করতে পারে।

আমার ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ। ৯ নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার প্রার্থী আজগর আলী জানান, জনগন ভোট নিয়ে খুবই আগ্রহী। কিন্তু অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের আস্থায় ফিরতে হবে। এখানে কিছু মানুষকে লাভবান করার জন্য মুক্তিযোদ্ধের চেতনার সরকার আশা করি প্রশ্নবিদ্ধ হবেনা। আমার দল ক্ষমতায়। আমরা কারো দয়ায় নির্বাচিত হওয়ার পক্ষ নই। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আমিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ভোটের ৮ দিন বাকী রয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা কি হবে সেটি জনগনকে দেখাতে হবে। আমরা সকল প্রার্থী সমান সুযোগ চাই। যাকে জনগন ভোট দেবে তিনি হবেন টইটংয়ের জনপ্রতিনিধি। ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ বলেন, আমি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ন নির্বাচন প্রত্যাশী। জনগন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট চান। এখানে মানুষের জানমালের বিপন্নকারীদের জনগন এবার প্রত্যাখ্যান করবে। আসলে আমি আর্থিক সংকটের মধ্যে আছি। এখানে কাউকে ভয় করার প্রশ্ন অবান্তর।

সাবেক চেয়ারম্যান ও চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জেডএম মোসলেম উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে জানিয়েছেন, মানুষ ভোট নিয়ে সংশয়ের মধ্যে আছে। পেশীশক্তির জোরে কোন প্রার্থী যেন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসনকে কাজ করতে আহবান করছি। এ নির্বাচনের উপর নিভর করবে উপজেলার সব ইউনিয়নের নির্বাচন। এখান থেকে জনগনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন না ঘটানো হলে সব নির্বাচন নিষ্প্রভ থেকে যাবে। আমি আইন শৃংখলা মিটিংয়ে এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছি। সাবেক চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমিও অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট চাই। বিতর্কিত নির্বাচন প্রত্যাশী নয়।

এ দিকে অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এ অঙ্গীকার প্রশাসন নিশ্চিত করেছে। টইটংয়ের নির্বাচন নিয়ে পেকুয়ায় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ তার বক্তব্যে বলেছেন, ভোট হবে নিরপেক্ষ। গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিত সকল কার্যক্রম প্রশাসন পরিচালনা করবে।

নির্বাচনে কোন পেশীশক্তি ও অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয় দেওয়া হবেনা। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে ও ভেতরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনে ভোটার ও প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবারের নির্বাচন হবে অতীতের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে শতভাগ সুষ্ঠু।

পাঠকের মতামত: